স্পোর্টস করেসপন্ডেন্ট
১৪ জানুয়ারি ২০২৫ ২১:৫৪ | আপডেট: ১৪ জানুয়ারি ২০২৫ ২১:৫৮
ছাত্র-জনতার গণ অভ্যুত্থানে সরকার পরিবর্তনের পর পরিবর্তন এসেছে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডেও (বিসিবি)। জাতীয় ক্রীড়া পরিষদের মনোনয়নে পরিচালক হয়ে নাজমুল হোসেন পাপনের জায়গায় বিসিবির সভাপতি হয়েছেন ফারুক আহমেদ। নাজমুল আবেদিন ফাহিম বোর্ড পরিচালক হয়েছেন। নতুন সভাপতি দায়িত্ব নিয়েই বিসিবির গঠনতন্ত্র সংশোধনের প্রয়োজনীয়তার কথা বলেছিলেন।
পরে নাজমুল আবেদিন ফাহিমকে প্রধান করে বিসিবির গঠনতন্ত্র সংশোধনের জন্য ৫ সদস্যের এটা বিশিষ্ট কমিটি গঠন করা হয়। ৫ সদস্যের সেই কমিটি একটি খসড়া গঠনতন্ত্র জমা দিয়েছে। খসড়া গঠনতন্ত্রে সেসব বিষয়ে পরিবর্তন আনা হয়েছে তার প্রেক্ষিতে ক্ষুব্ধ ঢাকার ক্লাবগুলো। নাজমুল আবেদিন ফাহিমের পদত্যাগ চাইছে ঢাকার ক্লাবগুলো।
আজ মঙ্গলবার (১৪ জানুয়ারি) রাজধানীর পূর্বানী হোটেলে মতবিনিময় সভার আয়োজন করেছিল সিসিডিএম ভুক্ত ঢাকার ৭৬টি ক্লাব। এই সভা থেকে খসড়া গঠনতন্ত্রের বিরুদ্ধে ক্ষোভ প্রকাশের পাশাপাশি ফাহিমের পদত্যাগের দাবি তোলা হয়।
বিসিবির সাধারণ পরিষদে ক্যাটাগরি-২ এ সিসিডিএমভূক্ত ৭৬ ক্লাবের কাউন্সিলরশিপ থাকত। গঠনতন্ত্রের খসড়া সংশোধনীতে ৭৬ সংখ্যাটা কমিয়ে ৩০-এ নামিয়ে আনার প্রস্তাব রাখা হয়েছে। বিসিবির কার্যনির্বাহী কমিটিতে ৭৬ ক্লাব কাউন্সিলের মধ্যে আগে ১২ জন পরিচালক নির্বাচিত হতেন, সেই সংখ্যাটা ৪-এ নামিয়ে আনার প্রস্তাব করা হয়েছে। সিসিডিএম বিলুপ্তির প্রস্তাব তোলা হয়েছে সংশাধনীতে।
ঢাকার ক্লাব মালিকরা বিষয়টিকে বাংলাদেশ ক্রিকেটের জন্য বড় হুঁমকির বলে মনে করছেন। গঠনতন্ত্রের সংশোধনী বাতিল করা না হলে ঘরোয়া কোনো লিগেই অংশ না নেওয়ার হুঁমকিও দিয়ে রেখেছে ঢাকার ক্লাবগুলো।
মতবিনিময় সভায় লিজেন্ডেস অব রূপগঞ্জের জয়েন্ট সেক্রেটারি আহমেদ এসএম রুবেল বলেন, ‘শুক্রবারের মধ্যে প্রস্তাবনা খসড়া পুনঃরায় তৈরি করতে হবে। শনিবার আমরা বিসিবিতে যাব। আর এটা বাতিল না হওয়া পর্যন্ত কোনো লিগে অংশগ্রহণ করবে না ক্লাবগুলো। সংশোধনী কমিটির আহ্বায়ক ফাহিমকে পদত্যাগ করতে হবে।’
সভায় উপস্থিত বিসিবির সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও ক্রীড়া সংগঠক রফিকুল ইসলাম বাবু বলেন, ‘যে জিনিসগুলো করা হয়েছে গঠনতন্ত্রে, আমাদের ক্লাবগুলোকে অপমান করা হয়েছে। ঢাকা লিগের ক্লাবগুলো যে অবদান রেখেছে ক্রিকেটের উন্নয়নে, খেলোয়াড় সৃষ্টিতে, স্বাধীনতা থেকে এই পর্যন্ত, তাদেরকে প্রস্তাবিত গঠনতন্ত্রে অপমানিত করা হয়েছে। ১২ জন বোর্ড ডিরেক্টর থেকে চার জনে নিয়ে আসা হয়েছে, ৭৬ জন কাউন্সিলর থেকে ৩০ জনে নিয়ে আসা হয়েছে। এটা মানার যোগ্য না।’
ফাহিমের পদত্যাগের দাবি তুলে রফিকুল ইসলাম বলেন, ‘উনি যে কাজটা করেছেন সবাইকে বিতর্কের মুখে ফেলে দিয়েছেন, এটা আমাদের সংগঠকরা ক্ষোভের মুখে বলতে পারে, যে সিদ্ধান্তগুলো নিয়েছে ঢাকার ক্লাবগুলো যদি না চায় তাহলে বোর্ড চালানোর ক্ষমতা কারও নেই।’
উল্লেখ্য, মত বিনিমিয় সভার সভাপতিত্ব করেন বিসিবির সাবেক যুগ্ন সাধারণ সম্পাদক রফিকুল ইসলাম বাবু। অন্যদের মধ্যে আরও উপস্থিত ছিলেন সিসিডিএমের সাবেক কর্মকর্তা ও উত্তরা ক্লাবের সেক্রেটারি সৈয়দ বোরহান হোসেন পাপ্পু, লিজেন্ড অব রুপগঞ্জের সত্তাধিকারী লৎফুর রহমান বাদল, মোহামেডানের কাউন্সিলর মাসুদুজ্জামান, সাবেক জাতীয় ক্রিকেটার ও আবাহনীর সাবেক কর্মকর্তা জিএস হাসান তামিম, লালমাটিয়া ক্রিকেট ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক আদনান রহমান দিপন এবং সাবেক বিসিবি পরিচালক ও বাংলাদেশ বিমান ক্রিকেট দলের শীর্ষ কর্মকর্তা আলী আহসান বাবুসহ অনেকে।
সারাবাংলা/এসএইচএস