বার্ড ফ্লু ছড়িয়ে পড়লেও ডিম খাওয়া কি নিরাপদ? বিশেষজ্ঞদের মতামত

বার্ড ফ্লু ছড়িয়ে পড়লেও ডিম খাওয়া কি নিরাপদ? বিশেষজ্ঞদের মতামত

ঢাকাপ্রতিদিন স্বাস্থ্য ডেস্ক : যুক্তরাষ্ট্রসহ বিভিন্ন দেশে বৃদ্ধি পাচ্ছে বার্ড ফ্লুতে আক্রান্ত হচ্ছে খামারের মুরগি। আর এ কারণে মুরগির মৃত্যুহার বাড়ছে। যার ফলে বিশ্ব বাজারে অনেক সময় ডিমের সংকট তৈরি হচ্ছে সেই সঙ্গে বাড়ছে দামও। পুষ্টির সহজ জোগান হিসেবে অনেকেই প্রতিদিন ডিম খান। তবে বার্ড ফ্লু দেখা দিলেই তারা ভয়ে থাকেন। অনেকেই মনে করেন বার্ড ফ্লুতে আক্রান্ত হলে সেই মুরগির ডিম খাওয়া নিরাপদ নয়। কিন্তু স্পট ধারণা নেই অধিকাংশের। ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসের এক প্রতিবেদনে এ বিষয় বিস্তারিত কথা বলেছেন বিশেষজ্ঞরা।

ডিম খেলে কি বার্ড ফ্লু ছড়াতে পারে: বিশেষজ্ঞরা বলছেন, মানুষের জন্য বার্ড ফ্লুর ঝুঁকি এখনো কম। তবে ভাইরাসটি ছড়াতে থাকলে এবং পরিবর্তিত হলে পরিস্থিতি জটিল হতে পারে। যদিও এখন পর্যন্ত, সংক্রমিত ডিম খেয়ে বার্ড ফ্লু হওয়ার সম্ভাবনা খুবই কম। ভেটেরিনারি জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ ড. গেইল হ্যানসেন বলেন, মৃত মুরগি ডিম পাড়ে না, অর্থাৎ সংক্রমিত মুরগির ডিম খাওয়ার সম্ভাবনা খুবই কম। আক্রান্ত খামারগুলোর ডিম বাজার থেকে তুলে নেয়া হয়।

যুক্তরাষ্ট্রের ফেডারেল নিয়ম অনুযায়ী, বাণিজ্যিকভাবে বিক্রির জন্য প্রস্তুত করা ডিমগুলোর খোসা ভালোভাবে ধুয়ে ও জীবাণুমুক্ত করা হয়, যা ভাইরাস দূর করতে সহায়তা করে। তাছাড়া, সংক্রমিত মুরগির শরীরে ভাইরাস দ্রুত ছড়িয়ে পড়ায় তারা খুব তাড়াতাড়ি অসুস্থ হয়ে পড়ে বা মারা যায়, যার ফলে সংক্রমিত ডিম বাজারে আসার সম্ভাবনা কম থাকে।

কাঁচা ডিম কি বিপজ্জনক: বিজ্ঞানীরা এখনও নিশ্চিত নন যে, বার্ড ফ্লু সংক্রমিত ডিম বা দুগ্ধজাত পণ্য খেলে মানুষের মধ্যে ভাইরাস ছড়াতে পারে কি না। তবে, ২০২৪ সাল থেকে যুক্তরাষ্ট্রে কমপক্ষে ৬৬ জন বার্ড ফ্লুতে আক্রান্ত হয়েছেন, যাদের বেশিরভাগই সংক্রমিত প্রাণীর সংস্পর্শে গিয়েছিলেন।

গবেষণায় দেখা গেছে, সংক্রমিত কাঁচা দুধ খেয়ে বানর অসুস্থ হয়েছে এবং দূষিত দুধ ও অপরিশোধিত খাবার খেয়ে বিড়াল মারা গেছে। তবে ডিমে ভাইরাসের উপস্থিতি তুলনামূলকভাবে কম হতে পারে।

নিরাপদে ডিম খাওয়ার উপায়: স্বাস্থ্য ঝুঁকি এড়িয়ে ডিম খাওয়ার বেশ কিছু সহজ উপায় জানিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা। সেগুলো হলো:

ভালোভাবে রান্না করুন: ডিম কমপক্ষে ১৬৫ ডিগ্রি ফারেনহাইট তাপমাত্রায় রান্না করলে ভাইরাস নষ্ট হয়ে যায়। সিদ্ধ ডিমের কুসুম শক্ত হতে হবে। সেই সঙ্গে ডিমের অন্যান্য অংশগুলোও শক্ত হওয়ার বিষয়টিও দিকটিও নজরে রাখা দরকার।
কাঁচা ডিম না খাওয়া: কাঁচা ডিম বা অপরিশোধিত ডিম দিয়ে তৈরি খাবার খাওয়া থেকে বিরত থাকুন।
পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা: ডিম ফ্রিজে রাহার আগেও ভালোভাবে ধুয়ে নিতে হবে। এমনকি কাঁচা ডিম ব্যবহারের পর হাত ভালোভাবে ধুয়ে নিন এবং রান্নার পাত্র ও স্থান সাবান দিয়ে পরিষ্কার করুন।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, সঠিকভাবে রান্না করা ডিম খেলে বার্ড ফ্লু সংক্রমণের সম্ভাবনা একেবারেই কম। তাই বাজারে ডিমের দাম বাড়লেও, স্বাস্থ্যঝুঁকি এড়াতে সঠিক খাদ্যবিধি মেনে চলাই সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ।
ঢাকাপ্রতিদিন/এআর

OR

Scroll to Top