এন্টারটেইনমেন্ট করেসপনডেন্ট
১৭ এপ্রিল ২০২৫ ১৯:১৫ | আপডেট: ১৭ এপ্রিল ২০২৫ ১৯:১৭
বাংলাদেশে সৌদি আরবের সদ্য সাবেক রাষ্ট্রদূত ঈসা ইউসুফ ঈসা আলদুহাইলানের করা অভিযোগের ভিত্তিতে ডিবি পুলিশের হাতে আটক হয়েছেন মডেল মেঘনা। বর্তমানে কারাগারে রয়েছেন এ মডেল। তাকে আটকের পরে অনেকেই তার পরিচয় সম্পর্কে জানতে চেয়েছেন।
মেঘনা আলমের সঙ্গে সৌদি আরবের সদ্য বিদায়ি রাষ্ট্রদূতের পরিচয় হয়েছিল আট মাস আগে। সেই পরিচয়েই ধীরে ধীরে গড়ে ওঠে সখ্য। মেঘনার পরিবারের দাবি, পরিচয়ের মাত্র চার মাস পর গত বছরের ৪ ডিসেম্বর তাদের মধ্যে গোপনে বাগদান সম্পন্ন হয়। তবে এর পক্ষে কোনো প্রমাণ দেখাতে পারেননি তারা।
মেঘনার পরিবার সূত্রে জানা গেছে, তারা তিন দশক আগে বরিশাল থেকে ঢাকায় আসেন। মেঘনা ভিকারুননিসা নূন স্কুল ও কলেজ থেকে এইচএসসি পাশ করে নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বিবিএ সম্পন্ন করেন। ২০২০ সালে তিনি ‘মিস আর্থ বাংলাদেশ’ প্রতিযোগিতায় বিজয়ী হন। মডেলিং ছাড়াও উদ্যোক্তা হিসাবে কাজ করছেন। বসুন্ধরা আবাসিক এলাকায় ভাড়া বাসায় থাকতেন। ফ্যাশন শো, বিজ্ঞাপন, ফটোশুট ও টেলিভিশন প্রোগ্রামে নিয়মিত অংশগ্রহণের মাধ্যমে তিনি নিজেকে ফ্যাশন দুনিয়ায় প্রতিষ্ঠিত করেন।
জানা গেছে, মিস আর্থ বাংলাদেশ প্রতিযোগীতায় বিজয়ী হওয়ার পরে তিনি মিডিয়ায় খুব বেশি কাজ করেননি। মূলত ‘মিস আর্থ ফাউন্ডেশন’ ও নিজের ব্যবসা নিয়ে ব্যস্ত ছিলেন। তবে তাকে নিয়মিত র্যাম্পে হাঁটতে দেখা গেছে।
মেঘনার ক্যারিয়ার শুরু হয় র্যাম্প মডেল হিসেবে। ধীরে ধীরে তিনি বিভিন্ন আন্তর্জাতিক ও জাতীয় ফ্যাশন হাউজের সঙ্গে কাজ করার সুযোগ পান। তার অনন্য বডি ল্যাঙ্গুয়েজ, ক্যামেরার সামনে সাবলীল আচরণ এবং প্রফেশনাল মনোভাব তাকে মডেলিং জগতে দ্রুত পরিচিতি এনে দেয়।
ফ্যাশন ছাড়াও মেঘনা সমাজসেবামূলক কর্মকাণ্ডেও যুক্ত। নারীর ক্ষমতায়ন, সচেতনতা বৃদ্ধি এবং সমাজের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ের উপর তিনি কাজ করে চলেছেন। তার ব্যক্তিত্ব ও কর্মপ্রবণতা তরুণ প্রজন্মের জন্য অনুপ্রেরণা।
বিভিন্ন সাক্ষাৎকারে তার মেঘনার ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা সম্পর্কে জানান, তিনি তার নিজের ফ্যাশন ব্র্যান্ড প্রতিষ্ঠা করতে চান এবং আন্তর্জাতিক প্ল্যাটফর্মে কাজ করার স্বপ্ন রয়েছে।
সম্প্রতি সৌদি রাষ্ট্রদূত পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কাছে অনানুষ্ঠানিকভাবে অভিযোগ জানান, একজন নারী তার কাছ থেকে ‘আর্থিক সুবিধা নেওয়ার জন্য’ সম্পর্ককে কাজে লাগানোর চেষ্টা করছেন এবং হুমকি দিচ্ছেন। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে অবহিত করে। সেখানে বিষয়টি তদারক করেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার একজন বিশেষ সহকারী। তার নির্দেশে ডিবি পুলিশকে দেওয়া হয় খোঁজ নেওয়ার দায়িত্ব। এরই মধ্যে ৯ এপ্রিল রাতে রাজধানীর বসুন্ধরা আবাসিক এলাকার একটি ভাড়া বাসা থেকে মেঘনাকে আটক করে ডিবি পুলিশ। আটকের কিছু আগে মেঘনা ফেসবুক লাইভে এসে বলেন, ‘পুলিশ পরিচয়ে কিছু লোক’ তার বাসার দরজা ভাঙার চেষ্টা করছেন। পরদিন ১০ এপ্রিল পুলিশের আবেদনের ভিত্তিতে আদালত বিশেষ ক্ষমতা আইনে মেঘনাকে ৩০ দিনের আটকাদেশ দেন। মেঘনাকে গ্রেফতারের পর তার সহযোগী দেওয়ান সমীরকে গ্রেফতার করা হয়।
সারাবাংলা/এজেডএস